দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানম ও তার বাবা ওমর আলীর ওপর হামলার ঘটনায় এজাহারভুক্ত মূল আসামি আসাদুল ইসলামকে (৩৫) দিনাজপুর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত তিনটার সময় তাকে ডিবির হাতে হস্তান্তর করেছে ঘোড়াঘাট থানা-পুলিশ।
আজ রোববার সকালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ডিবি পুলিশ পরিদর্শক ইমাম জাফর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আসাদুল ইসলাম শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ। পুলিশ তার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছে। আজ বিকেলে তাকে আদালতে সোপর্দ করা হবে এবং রিমান্ড চেয়ে আদালতের কাছে আবেদন জানানো হবে।
এর আগে গত শুক্রবার ভোর রাতে আসাদুল ইসলামকে হামলার ঘটনায় জড়িত সন্দেহে হাকিমপুর উপজেলার কালিগঞ্জ এলাকায় বোনের বাসা থেকে আটক করে হাকিমপুর থানা-পুলিশ। পরে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় রংপুর রেঞ্জে পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) কার্যালয়ে।
সেদিন রাতেই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়লে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয় আসাদুলকে। পরে শনিবার রাতে ঘোড়াঘাট পুলিশের কাছে আসাদুলকে হস্তান্তর করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
এদিকে, গতকাল বিকেলে ঘোড়াঘাট থানার পুলিশ পরিচয় দিয়ে সাদা পোশাকধারী ব্যক্তিরা আসামি আসাদুলের ভাই আশরাফুল ইসলাম (৪০) ও ইউএনওর বাসার মালি সুলতান কবিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে যায় বলে জানা গেছে। তবে ঘোড়াঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুল ইসলাম তাদের তুলে আনার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার মধ্যরাতে ইউএনওর সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর কেটে দুর্বৃত্তরা তার শয়নকক্ষে ঢুকে পড়ে। এর আগে দুর্বৃত্তরা ওই বাসভবনের নিরাপত্তাপ্রহরীকে বেঁধে প্রহরীকক্ষে তালা দিয়ে আটকে রাখে। ইউএনওর বাবা ওমর আলী (৭০) প্রতিদিন সকালে হাঁটতে বের হন। কিন্তু বৃহস্পতিবার সকালে তিনি হাঁটতে বের না হওয়ায় সঙ্গীরা তার খোঁজ নেওয়ার জন্য বাসভবনে যান। অনেক ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেন।
পরে পুলিশ গিয়ে ইউএনও, তার বাবা ও প্রহরীকে উদ্ধার করে। আহত বাবা-মেয়েকে বৃহস্পতিবার সকালে প্রথমে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে ওয়াহিদাকে বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারে ঢাকায় আনা হয়। তিনি এখন ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে চিকিৎসাধীন।
Leave a Reply